গৃহসম্পত্তি কী?
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩৫ এ গৃহসম্পত্তিকে নিম্নবর্ণিতভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে,
যথা:-
(ক) আসবাবপত্র, ফিক্সার, ফিটিংস যাহা উক্ত গৃহের অবিচ্ছেদ্য অংশ; এবং
(খ) গৃহসম্পত্তি যে ভূমির উপর স্থাপিত উক্ত ভূমি।
তবে, নিম্নবর্ণিত ভবন বা দালান এর অন্তর্ভুক্ত হবে না, যথা:-
(অ) কোনো ভবন যা সম্পূর্ণরূপে গুদাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়, বা
(আ) কোনো কারখানা ভবন যাহা প্ল্যান্ট ও মেশিনারি ভাড়া প্রদানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে ভাড়া প্রদান করা হয়।
ভাড়া হইতে আয় কী?
আয়কর আইন ২০২৩: ধারা ৩৬ অনুযায়ী —-
কোনো ব্যক্তির কোনো সম্পত্তির ভাড়া প্রদান হতে অর্জিত। মোট ভাড়ামূল্য হতে অনুমোদনযোগ্য খরচ বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকবে, তা হবে উক্ত সম্পত্তি হতে উক্ত ব্যক্তির ভাড়া হইতে আয়।
ধারা ৩৬–এর মূল বিষয়বস্তু
“বাৎসরিক মূল্য“ বলতে বোঝায়—
১. বৎসরান্তে সম্পত্তির যুক্তিসংগত ভাড়া;
২. চুক্তির ভিত্তিতে ধার্য করা ভাড়া, যদি তা সাধারণ বাজার দরের চেয়ে বেশি হয়
এই ধারা অনুসারে যেকোনো সম্পত্তির (যেমন: ভবন, ফ্ল্যাট, দোকান, ইত্যাদি) আয় কর হিসাব করার সময় প্রকৃত ভাড়া, আনুমানিক ভাড়া, ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিবরণ যুক্ত করতে হবে।

উদাহরণ বিশ্লেষণ:
জনাব অমর ওসমান একটি ২ তলা আবাসিক ভবনের একটি তলা ভাড়া দিয়েছেন প্রতি মাসে ৫০,০০০ টাকা করে। বছর শেষে তাঁর আয় বিবরণী হবে:
বিবরণ | টাকা |
বাড়িভাড়া হতে আয় (৫০,০০০ × ১২) | ৬,০০,০০০ |
বিয়োগ: অনুমোদনযোগ্য খরচ (২৫%) | (১,৫০,০০০) |
মিউনিসিপ্যাল ট্যাক্স (হারাহারি) | (৬,০০০) |
করযোগ্য আয় | ৪,৪৪,০০০ |
এখানে করযোগ্য আয় হিসেব করা হয়েছে অনুমোদনযোগ্য খরচ বাদ দিয়ে।
যেসব ক্ষেত্রে কর প্রযোজ্য হবে না:
✅ যদি সম্পত্তি নিজের ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রাখা হয়
✅ যদি কোনো আয় অর্জনের উদ্দেশ্যে ভাড়া না দেওয়া হয়
✅ সরকারি/প্রাতিষ্ঠানিক নিয়োগে ব্যবহার হচ্ছে এবং কোনো ভাড়া আদায় হচ্ছে না
✅ যদি সম্পত্তি কাউকে “স্বত্বভোগ” হিসেবে বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়
“ভাড়া প্রদান” বলতে যা বোঝানো হয়েছে:
ভাড়া হইতে প্রাপ্ত আয় পরিগণনার ক্ষেত্রে অনুমোদনযোগ্য বিয়োজনসমূহ;-
১। গৃহসম্পত্তির ক্ষতির ঝুঁকির বিমার জন্য পরিশোধিত প্রিমিয়াম কর কর্তনযোগ্য।
২। গৃহসম্পত্তি নির্মাণ বা সংস্কারের জন্য নেওয়া ঋণের ওপর পরিশোধিত সুদ বা মুনাফা কর কর্তনযোগ্য।
৩। গৃহসম্পত্তির উপর পরিশোধিত কর, ফি বা অমুলধনি বার্ষিক চার্জ কর কর্তনযোগ্য।
৪। ভাড়ার আগে পরিশোধিত সুদ বা মুনাফা তিন আয়বর্ষে সমান কিস্তিতে কর্তনযোগ্য; এর পর আর বিয়োজনযোগ্য নয়।
৫। ভাড়া সংগ্রহ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, সার্ভিস চার্জ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ এবং অন্য কোনো মৌলিক সেবা সংক্রান্ত ব্যয়ের জন্য নিম্নবর্ণিত সারণীতে উল্লিখিত অংক, যথা:-
ক্রমিক নং | সম্পত্তির ধরন | সংবিধিবদ্ধ বিয়োজন (মোট ভাড়ামূল্যের শতকরা হারে) |
১। | বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত গৃহসম্পত্তি | ৩০% (ত্রিশ শতাংশ) |
২। | অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত গৃহসম্পত্তি | ২৫% (পঁচিশ শতাংশ) |
৬। আংশিক ভাড়ার ক্ষেত্রে আনুপাতিকভাবে খরচ কর্তনযোগ্য।
৭। আয়বর্ষের অংশে ভাড়ার ক্ষেত্রে খরচ আনুপাতিক হারে কর্তনযোগ্য।
